কুষ্টিয়ায় আদালত চত্বরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের উপস্থিতিতে ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কুষ্টিয়ার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
জানাযায়, দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী গ্রামের জালাল খাঁর ছেলে মাসুদ খাঁ, একই গ্রামের আক্কাস শেখের ছেলে সামাদ, নৈমুদ্দিন সিকদারের ছেলে আবু তালেব, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর গ্রামের রফিকুল সিকদারে ছেলে বকুলসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের একদল দুষ্কৃতিকারী এই হামলা চালায়। হামলাকারীরী চিলমারীতে ৩ জনকে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ড মামলার আসামিদের পরিবারের লোকজন।
এ ঘটনার পর বুধবার রাতে সাংবাদিক রাজু কুষ্টিয়া সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আদালতে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার সাংবাদিকরা।
হামলার শিকার রাজু আহমেদ বলেন, ঘটনার দিন দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী গ্রামে তিন জনকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার ৪০ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এ খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে আমি কুষ্টিয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলাম। এর আগে চিলমারী গ্রামে তিন জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকা পোস্টে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছি। এ কারণে আসামিপক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেন। এসময় তারা আমাকে হত্যার হুমকিও দেন। পরে আদালত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমি থানায় জিডি করেছি। আমার ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়াসহ প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া প্রেস সভাপতি আল মামুন সাগর বলেন, আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের সামনে হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক রাজু। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি চাই। তা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া নিব।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী গ্রামে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মণ্ডল গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা করা হয়। ওই সময় মণ্ডল গ্রুপের লোকদের বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। তাদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে দিনু মণ্ডল, ফারুক ও আকতার মণ্ডল নামে তিন জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন ২৫ জন। এ ঘটনার পরদিন ২৮ এপ্রিল মোজাম মণ্ডল বাদী হয়ে ৭৩ জনের নামসহ ১২০ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।#