চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২২ মার্চ) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব ঘর তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাসহ ১৫৯টি উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
মিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হারুন অর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মধ্যে দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ ৪৬ টি একক গৃহ হস্তান্তর করবেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মিরপুর উপজেলায় মোট ৩১৭ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনকে বিনামূল্যে জমি ও রঙিন টিন দিয়ে আধাপাকা ঘর করে দিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের মত একটি মহতী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরাসরি সম্পৃক্ত করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন একটি ভালো কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন, যার কারণে আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, শুধু সরকারি খাস জমিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকেও জমি ক্রয় করে এই প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সহায়তাও গ্রহণ করা হচ্ছে। গৃহের জমির মালিকানা স্বামী-স্ত্রীর নামে দিয়ে দেওয়া হয়। জমির রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন ও দাখিলা পর্যন্ত তাদের নামে করে দেওয়া হয়। তাই গৃহের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দায়িত্বও তাদেরকে দেওয়া হয়।
মিরপুর উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকার ভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এখন অনেক ভাল আছেন। কারণ, এখানে শুধু তারা বাড়ি উপহার পাননি। পেয়েছেন মাছ চাষ করার জন্য পাশের ক্যানেল, সবজি চাষ করার জন্য জমি। এছাড়া বাড়িতে বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ খাবার পানি, পাকা টয়লেট, যা তাদের সপ্ন ছিল, আজ প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে।
মিরপুর উপজেলার গৌড়দহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী মর্জিনা বেগম জানান, প্রধানমন্ত্রী যে জায়গাটুকু দিয়েছে, সেখানে থাকার ঘরের পাশের জায়াগাটির সঠিক ব্যবহারের জন্য লাউ, শিম, বেগুন, পালং শাক, লালশাকের আবাদ করা হচ্ছে। এখানে সবজি চাষ করে পরিবারের খাওয়া এবং বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করতে পারছি। এতে আমাদের বেশ স্বচ্ছলতাও এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি পাওয়া হুরজেল আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্ত্রীকে সাথে নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকতাম। আমার কয়েকবছর আগে পক্ষাঘাতে (প্যারালাইজড) এ আক্রান্ত হয়ে পড়ি। বেশ কয়েক বছর ধরে এই দূরারোগ্য ব্যাধির কবলে পড়ে সংসারটা এলোমেলো হয়ে গেছে। তবে সংসার চালানোর জন্য আমার স্ত্রী এই সরকারী বাড়ীতে হাঁস-মুরগি পালন করছে। এখন অন্তত মাথা গোঁজার ঠাঁই হওয়ায় আমি সরকারের প্রতি অনেক খুশী।