সৈয়দা আফরোজা বেগম
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু মীর জুলফিকার তারেক বেশ ক’দিন আগে ফোন করে বললো , কুস্টিয়া সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরনিকা প্রকাশ করা হবে , সেজন্য কলেজের স্মৃতি নিয়ে একটা লেখা দিতে । ওর কথায় বেশ ভাবনায় পড়ে গেলাম । কারন , আমি মনের তাগিদে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করে ডিগ্রি অর্জন করলেও আমি তো প্রতিভাসম্পন্ন কোন কবি লেখক নই যে তাৎক্ষনিক ভাবে কোন কিছু লিখে ফেলবো । আজ থেকে চল্লিশ-বিয়াল্লিশ বছর আগে ছেডে আসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সেখানকার শিক্ষক ও সহপাঠীদের স্মৃতিও এখন সব মনে নেই । বয়স পেশা ও সংসার জীবনের অন্তরালে অনেক স্মৃতিই এখন বিস্মৃতিতে পরিনত হয়ে গেছে । তবুও নিজের কলেজ বলে কথা , স্মৃতি হাতড়িয়ে তাই লিখতে বসে গেলাম ।
কলেজের কথা বলার আগে নিজেদের পরিবার ও ছোটবেলার কিছু কথা বলতেই হবে , না হলে এ কলেজে পড়ার প্রেক্ষাপট জানা যাবে না । আমাদের বাড়ি কুস্টিয়া সদর উপজেলার ‘জুগিয়া’ নামের এক গ্রামে । জেলা শহর থেকে এ গ্রামের দূরত্ব তখনকার মাইলের হিসাবে কেউ বলতো তিন মাইল , কেউ বলতো চার মাইল ; অর্থাৎ শহরতলী । প্রাইমারী স্কুল শেষে হাই স্কুল ও কলেজে পড়ার জন্য এ গ্রাম থেকেই আমাদের যেতে হতো কুস্টিয়া জেলা শহরে । শহরতলী হলেও যোগাযোগের মূল রাস্তা ছিল খুবই খারাপ । যদিও গাড়ী বা ট্রাক বা রিকশা সবই চলাচল করতো এ পথে , কিন্তু নানাবিধ কারনে আমাদের চলতে হতো কিছু পথ হেঁটে আবার কিছু পথ রিকশা করে । এলাকায় আমাদের পরিবার অর্থনৈতিক ভাবে বড় কোন অবস্হানে না থাকলেও শিক্ষা ও মান-সন্মানের দিক দিয়ে ছিল বেশ উপরে । দাদা ও আমার বাবা শিক্ষানুরাগী হিসেবে এলাকায় খুবই সন্মানীয় ছিলেন , দাদা নিজেও ছিলেন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক । এ সব কারনে পডালেখায় তাঁদের নিকট থেকে কোন বাধা তো আসেইনি , বরং ক্লাসের পড়ার পাশাপাশি গল্পের বই পড়ার ক্ষেত্রে তাঁদের থেকেই বেশী অনুপ্রনিত হয়েছি । দাদা ও বাবার সংগ্রহে ছিল বঙ্কিম , শরৎ , রবীন্দ্র , নজরুল সহ বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক ও লেখকদের বই ; ছিল পবিত্র কোরআন শরীফ , বাইবেল , গীতা , মহাভারত , রামায়ন সহ নানা রকম বই ও পত্রিকার সমাহার । আমি ক্লাস টু অর্থাৎ ২য় শ্রেনীতে উত্তীর্ন হবার পর দাদা আমাকে দু’টি বই পড়তে দেন – একটি ছোটদের গল্পের বই ( নীল সায়রে নদীর হাট ) ও অপরটি ছিল একটি ওয়ার্ডবুক ( ইংরেজী থেকে বাংলা ) । ঐ সেই সময় থেকেই আমার যে ক্লাসের বইএর সাথে সাথে গল্পের বই বা আউট বই পড়ার শুরু তা আজও অব্যাহত আছে । আর ঐ বই পড়ার অভ্যাস থেকেই সাহিত্যর প্রতি আকর্ষন ও পরবর্তীতে এরই ধারাবাহিকতায় একদিন কুস্টিয়া সরকারী কলেজে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ নামক বিষয়ে ভর্তি হওয়া ও ভাল ফলাফল সহ অনার্স ডিগ্রী অর্জন করা।
এস এস সি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হওয়ার পর আমার খুব ইচ্ছা ছিল কুস্টিয়া সরকারী কলেজে পড়ার । কিন্তু এক চাচার ‘কু’ পরামর্শ শুনে বাবা আমাকে মহিলা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলেন । চাচা বলেছিলেন , সরকারী কলেজে ছেলে-মেয়ে যেহেতু এক সাথে পড়ে সেহেতু ওখানে মেয়েকে পড়ানো যাবে না । অথচ পরের বছর ঐ চাচার মেয়ে এস এস সি পাশের পর তিনি ( চাচা ) কারো সাথে পরামর্শ না করে ওকে ( চাচাত বোন ) এই সরকারী কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলেন ! এরপর এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্নের পর বাবা বললেন , তিনি বিশ্ববিদ্যালয়র পড়ার খরচ দিতে পারবেন না ,আমি যেন কুস্টিয়া সরকারি কলেজে ইংরেজী বা অর্থনীতিতে অনার্স পড়ি অথবা অর্থনীতি ও ইংরেজী বিষয় নিয়ে পাস কোর্সে ডিগ্রী পড়ি । উল্লেখ্য যে , আমরা ছিলাম সাত বোন , বড় দু’ বোন ততদিনে বিবাহিত ; আমি ও আমার ছোট বোনেরা সবাই পড়ালেখা করি । বাবা একা উপার্জন করেন , আর মা বাবার সরকারী চাকরির সীমাবদ্ধ অর্থ দিয়ে হিসাব করে সংসার চালান , যা আমরা খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারতাম । সঙ্গত কারনেই আমি বিনা বাক্য ব্যয়ে এক কথায় কুস্টিয়া সরকারী কলেজে পড়তে রাজী হয়ে যাই ।
তখন দেশে অনার্স পড়ার একটি জোয়ার চলছিল ( সত্তরের দশক ) , তাই আমিও অনার্স পড়ার জন্য অর্থনীতির সাথে সাথে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্যও ভর্তি পরীক্ষা দিই , আর দু’ বিষয়েই খুব ভাল ভাবে উর্ত্তীণ হই । বাবার কথামত আমি অর্থনীতিতে ভর্তির জন্য ফর্ম তুলে পূরনও করি , পরদিন টাকা জমা দিয়ে ভর্তি হওয়ার কথা । কিন্তু মন টানছিল না অর্থনীতি পড়তে । কারন আমি বাংলা সাহিত্যকে ভালবাসার কারনেই উচ্চ মাধ্যমিকে নিয়েছিলাম ‘ উচ্চতর বাংলা ‘ নামক একটি বিষয় । ঐ বিষয়ের শিক্ষক তখন বলেছিলেন , ডিগ্রি পর্যায়ে সাধারনত যারা সাহিত্যে অনার্স পড়ে তাঁরাই উচ্চ মাধ্যমিকে এ বিষয়টি নিয়ে থাকে , আমি কি ভবিষ্যতে বাংলা সাহিত্য পড়বো – সেটিও তিনি জানতে চেয়েছিলেন । ঐ সময়ে কোন সিদ্ধান্ত না নিলেও ভর্তির দিন বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে কলেজে এসে তাঁর ইচ্ছার মূল্য না দিয়ে ‘অর্থনীতি’ নয় , নিজের মনের টানে ‘ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ‘ বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হলাম কুস্টিয়া সরকারি কলেজে , সালটা হবে ১৯৭৬ / ১৯৭৭ । ঐ সময় থেকে আমার কুস্টিয়া সরকারি কলেজের সাথে পথ চলা , যা শেষ হয় ১৯৮০ বা ১৯৮১ সালে অনার্স পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে ।
মাঝে মাঝে কুস্টিয়া গেলেও কলেজের দিকে যাওয়া হয় না অনেক অনেক দিন , জানিনা তার ভেতরে বাইরে অবকাঠামোর কি পরিবর্তন হয়েছে বা পড়া লেখার পরিবেশটাই বা এখন কেমন । শহরের ঠিক মাঝখানে নয় , কুস্টিয়া শহরের একটু উত্তরের দিকে ছিল কলেজটি , কলেজের মূল ভবনের সামনেই ছিল রাস্তা । তখন এ ভবনের সামনে মাঝ বরাবর ছিল প্রধান গেট , মূল গেট বাদেও পাশেই আর এক দিক দিয়েও কলেজে যাওয়া যেত , ওখানে তখন গেট ছিল না , পরে তৈরী করা হয়েছে ; এ গেট দিয়ে ঢুকলেই ডান দিকে ছিল ক্যান্টিন । মূল ভবনের সিঁড়ি থেকে গেট পর্যন্ত পথের দু’ধারে ছিল ফুলের গাছ , তার দু’পাশে ছিল সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত মাঠ যার মাঝে মাঝে ছিল বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ ; কলেজের মালি সব সময় এ সব গাছ সহ মাঠের যত্ন নেয়ায় ফলে সব সময় জায়গাটা থাকত খুবই পরিস্কার ও দৃস্টিনন্দন । মূল ভবনে ছিল প্রশাসনিক অফিস , বিভাগীয় শিক্ষকদের রুম, লাইব্রেরি রুম ও বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের ল্যাবরোটরি ; মেয়েদের কমন রুম ও অধ্যক্ষের রুম ছিল দোতলায় । এ ভবনে কিছু কক্ষে ক্লাসও হতো ; তবে বেশীর ভাগ ক্লাস হতো পাশের দোতলা ভবনে । দোতলায় মেয়েদের কমন রুমের পাশে ছিল খোলা ছাদ , তখন এ ছাদ ছিল যেন একান্তই মেয়েদের বিচরনের জায়গা । কলেজের পূর্ব পাশে ছিল খেলার মাঠ , তার পেছনে ছিল ছেলেদের হোস্টেল ( মেয়েদের কোন হোস্টেল ছিল না )। মাঠের পাশে কলেজের পেছন দিকে ছিল বড় এক পুকুর , ঐ পুকুর পাড়েও আমরা অফ পিরিয়ডে আড্ডা দিতাম । কলেজের লাইব্রেরী রুমটাও ছিল বেশ বড় , ক্লাসের পড়ার বই সহ ছিল নানান বিষয়ের নানা রকম বই । কলেজের প্রিয় প্রিয় জায়গাগুলির মধ্যে লাইব্রেরী ছিল আমার সবচেয়ে বেশী পছন্দের জায়গা । তখন লাইব্রেরীয়ান ছিলেন হাসি-খুশি মুখের গুডুল ভাই ( ভাল নাম এখন মনে নেই ) , আমাদের সাথে তাঁর ব্যবহার ছিল খুবই অমায়িক । আমাদের কলেজের বাইরের পরিবেশ যত সুন্দর ছিল , তেমনি শিক্ষক-ছাত্রদের সম্পর্ক ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও সবার সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত মধুর ; পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালবাসা ও স্নেহের বন্ধন কাজ করতো শিক্ষক ছাত্র উভয়ের মাঝে । তখন কলেজের ছাত্রদের মধ্যে রাজনীতি ছাড়া এখনকার মত টেন্ডার বা অন্য কোন রকম অপ- রাজনীতির চর্চায় কখনো লিপ্ত হতে দেখিনি ।
যতদূর মনে পড়ে এ কলেজে তখন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য , অর্থনীতি , রাস্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাবিজ্ঞানে অনার্স পড়ানো হতো , গনিতেও মনে হয় অনার্স ছিল । আমাদের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান বা বিভাগীয় প্রধান ছিলেন অসিত কুমার মজুমদার স্যার , তিনি পোষাক-পরিচ্ছদ ও আচার- আচরনে সব সময় থাকতেন টিপটপ ফিটফাট হয়ে । আর ছিলেন কামরুল হুদা স্যার, শহীদ স্যার , ধীর আলী মিয়া স্যার , ইদ্রিস আলী স্যার , নুরুননাহার আপা ( তখন ম্যাডাম বলার চল ছিল না ) সহ আরো শিক্ষক যাঁদের সবার নাম এখন মনে হচ্ছে না। কম বেশী সব শিক্ষকই ভাল ও আন্তরিক ছিলেন । অসিত কুমার স্যার আমাদের রবীন্দ্র সাহিত্য পড়াতেন , রবীন্দ্রনাথ মনে হয় তাঁর চেতনায় মিশে একাকার হয়ে ছিলেন ; তাই তিনি যখন রবীন্দ্র সাহিত্য পড়াতেন তখন মনে হতো তিনি যেন তাঁর হৃদয়ের গহীন থেকে বক্তব্য দিচ্ছেন যা আমরা তা মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতাম । কামরুল হুদা স্যার কলেজের নানাবিধ কাজে এত ব্যস্ত থাকতেন যে , মাঝে মাঝে ক্লাস নিতেন না । কিন্তু পরে যখন ক্লাস নিতেন তখন আগের না করা ক্লাসগুলো এমন ভাবে পুষিয়ে দিতেন যা একমাত্র তাঁর মত শিক্ষকের পক্ষেই সম্ভব ছিল । এ টি সহ তাঁর সদা হাসি মুখ ও মিস্টি ভাষার কারনে তিনি সবার প্রিয় শিক্ষক ছিলেন ।
জাফর স্যার ছিলেন গীতিকার , সুরকার ও নিজে স্বয়ং সংগীত শিল্পী । তাঁর কালজয়ী গান – ‘ এই পদ্মা এই মেঘনা এই যমুনা নদী তটে ‘ , ‘ তোমরা কি ভুলেই গেছ মল্লিকাদির নাম ‘ এক সময় ছিল সবার মুখে মুখে । এ গানের শিল্পী ছিলেন তাঁরই স্ত্রী বিখ্যাত লালন শিল্পী ফরিদা পারভীন । তিনি আমাদের কুস্টিয়া সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগেরই ছাত্রী ছিলেন । তাঁরই মত এই কলেজের বাংলা বিভাগে পড়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন কুস্টিয়ার সবার পরিচিত ম ,মনিরুজ্জামান ( কুস্টিয়া শিশু একাডেমির সংগঠক ) , আলমআরা জুঁই আপা ( ম, মনিরুজ্জামানের জীবন সঙ্গী , তিনিও কুস্টিয়ার সংস্কৃতি অঙ্গনের এক চেনা মুখ ) , নীনা আপা ( বাংলার পর ইংরেজী সাহিত্যও এম এ করেছিলেন , ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে সুনামের সাথে শিক্ষকতা করেছেন ) , নাসিমা সুলতানা ( কবি ছিলেন , তিনি বেঁচে নেই ) ও আরো
অনেকে । জুনিয়র সায়েদুল আরেফিন ( জাইকাতে কাজ করেন ) , সরোয়ার জাহান বাদশা ( জাতীয় সংসদ সংসদ সদস্য ) , কুমারখালীর উপজেলা চেয়ারম্যান মান্নান খান , কলেজে আমাদের একই ব্যাচের হিসাববিজ্ঞানের জব্বার ( শিক্ষা ক্যাডার ) , অর্থনীতির মোহসীন ( নির্বাচন কমিশন ) সহ আরো অনেকে ছিলেন , যাদের সবার সাথেই ছিল আমার ও আমার সহপাঠীদের খুব ভাল সহজ সরল সুন্দর শ্রদ্ধা ও স্নেহের সম্পর্ক । সিনিয়র জুনিয়র দন্দ্ব বা বুলিং বা রাজনৈতিক মতাদর্শের কারনে মারামারি কাটাকাটি , সীট দখল বা বানিজ্য বা কোন রকম চাঁদাবাজি – এ সবের কোন কিছুই তখন কলেজে ঘটতো না , কেউ ঘটতেও দেখিনি ।
আমাদের বাংলা বিভাগের শিক্ষগন বিশেষ করে কামরুল হুদা ও অসিত কুমার স্যার আমাদেরকে সব সময় বলতেন , সাহিত্যকে কেবল পরীক্ষা পাসের জন্যই পড়লে হবেনা , এটিকে মনের ভেতর থেকে ধারন করতে হবে , আত্মস্হ করতে হবে , মনকে করতে হবে উদার , অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক ; মনের কুপমন্ডুকতা ও সংকীর্নতা দূর করে খোলা মনে মিশতে হবে সহপাঠী বন্ধু ও মানুষের সাথে । তাঁরা আরো শিখিয়েছিলেন ক্লাসের ছেলে আর মেয়েদের মধ্যে সম্পর্ক হবে সুন্দর বন্ধুত্বের , যেখানে থাকবেনা কোন নোংরামী বা অসন্মান , স্যারদের কথার অন্যথা আমরা কেউ করেছি বলে মনে পড়ে না । আমরা যারা কুস্টিয়া সরকারী কলেজে তখন বাংলায় অনার্স পডেছি তাদের মধ্যে সহপাঠী ছিল লতা , কামরুন , তুলি , তারেক, মন্জু , মুজাহিদ , কাশেম ( প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করেছে ) , শান্তি আপা , বাবলী , বিনয় , শামছুজ্জামান , সেলিনা ও আরো অনেক । আমাদের সবার মধ্যে খুবই চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল । এই সু সম্পর্কের কারনে আমরা ছেলে-মেয়েরা একসাথে মাঝে মাঝে কলেজের সামনের চত্বরের সবুজ ঘাসের মধ্যে বসে আড্ডা দিতাম , কখনো ক্যান্টিন থেকে সিঙাডা এনে কখনো চীনা বাদাম কিনে হৈ চৈ করে খেতাম , দল বেঁধে ঘুরতাম , কখনো পুকুর পাড়ে বসে গল্প করতাম কখনো আবার দল বেঁধে ভাল ভাল বাংলা ইংরেজী সিনেমা দেখতে যেতাম ।
প্রথম দিকে অন্য বিভাগের ছেলে-মেয়েরা বা কোন কোন শিক্ষকও আমাদের মাঠে বসে গল্প করা বা এক সাথে ঘোরাঘুরি নিয়ে একটু আপত্তি করতেন ; তাঁরা বলতেন , মফস্বল শহরে ছেলে-মেয়েদের এক সাথে গল্প করা আড্ডা দেয়া ঠিক নয় । আমাদের বাংলার শিক্ষকদের বক্তব্য ছিল – ওরা সাহিত্য পড়ে , সাহিত্য পড়ুয়াদের অবশ্যই উদার ও খোলা মনের হতে হয় , এই খোলা মনকে বাধা দিলেই তা বিপথগামী হয় । তবে তাঁরা এটাও শিখিয়েছিলেন যে , উদার ও খোলামেলা মনে চলা মানে কিন্তু অশালীন বা অপ্রীতিকর বা আপত্তিজনক চলাফেরা বা কাজকর্ম করা নয় । আমরা এটি ঠিকই মেনে চলতাম । ছেলে-মেয়েদের একত্রে পড়া বা সহ শিক্ষা সম্পর্কে তাঁদের বক্তব্য ছিল – সহশিক্ষা মানুষের মনকে কুপমন্ডুকতা থেকে মুক্ত করে উদার ও মানবিক করে , ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে সম্পর্ককে করে সহজ ও বন্ধুত্বপূর্ন , তাতে মনের সংকীর্নতা দূর হয় ; সবচেয়ে বড় কথা – সহজ সুন্দর বন্ধুত্ব হলে ছেলেমেয়েদের পরস্পরের প্রতি অহেতুক ও অবান্ছিত কৌতুহল কমে যায় ; তাই আমাদের মনকে করতে হবে সুস্হ সুন্দর উদার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই বিশাল । আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি না পড়লেও শিক্ষকদের উদারতা ও অনুপ্রেরনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কলেজেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহ তৈরী করে নিয়েছিলাম ।
সে সময়ের কলেজে কর্মরত অন্য শিক্ষকদের কথাও বলতে হয় । অর্থনীতির শিক্ষক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ( এন আই সি , তাঁকে কে টু স্যার বলে সবাই চিনতো ) ও ফিজিস্কের শিক্ষক তৈয়ব স্যারের কথা না বললেই নয় । তাঁরা দু’জন ও বাংলার কামরুল হুদা স্যার – মূলত এই তিন জন ছিলেন তখন কুস্টিয়া সরকারী কলেজের প্রধান তিন দিকপাল , কলেজ প্রশাসনের প্রান ছিলেন তাঁরা । কলেজের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে তাঁদের মতামত নেয়া ছিল যেন অপরিহার্য । কামরুল হুদা স্যার যেমন ছিলেন সদা হাসিমুখের , নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও তৈয়ব স্যার ছিলেন তেমনি গুরুগম্ভীর ও রাশভারি প্রকৃতির । তবে প্রবল ব্যক্তিত্বের কারনে তাঁদের প্রতি ছিল আমাদের শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভয় ও সমীহ । মনে পড়ে ফিলোসফির মজিদ স্যার , ইংরেজী বিভাগের কাদের স্যার , ড. আনোয়ারুল করিম স্যার , অর্থনীতির মুসা স্যার ; সমাজবিজ্ঞানের স্যার ( নাম মনে হচ্ছেনা , তবে সাবসিডিয়ারিতে তাঁর পড়ানো ও চেহারা কিন্তু ভুলিনি ) , বাংলা বিভাগে পরবর্তীতে যোগদান করা আমেনা আপা ও জাফর স্যারের কথা । সে সময়ে তাঁদের বাদ দিয়ে কলেজ যেন অসম্পূর্ণ মনে হতো । আমাদের তখনকার শিক্ষকদের কাছে শিক্ষকতা ছিল মহান এক ব্রত , তাঁরা এটাকে কেবল চাকরি মনে করতেন না ; তাঁদের আচরনে মনে হতো – ছাত্রদের পড়ানোর পাশাপাশি তাদের সদুপদেশ দেয়াও ছিল তাঁদের পবিত্র দায়িত্ব । তাঁরা কে কোথায় কেমন আছেন জানিনা , তাঁদের সবার প্রতি আমার অকুন্ঠ শ্রদ্ধা ।
আমরা যতদিন এ কলেজে পডেছি , ততদিনে পর্যায়ক্রমে তিন বা চার জনকে অধ্যক্ষ হিসেবে পেয়েছি । ক্লাস শুরুর পর ড. মু: নইমউদ্দিনকে মনে হয় মাত্র কয়েক মাস অধ্যক্ষ হিসেবে পেয়েছিলাম । তারপর অধ্যক্ষ ছিলেন জনাব ফজলুল করিম ও মু: আব্দুল আজিজ । সত্যি কথা বলতে তাঁদের চেহারা এখন অস্পষ্ঠ হয়ে গিয়েছে । আসলে তখনকার সে সময়ে অধ্যক্ষদের অবস্হান ছিল সাধারন ছাত্রদের থেকে বেশ দূরের , এ দূরত্বের কারন শ্রদ্ধা ও সন্মানের । আসলে সিনিয়র অধ্যাপক না হলে সাধারনত কোন শিক্ষককে কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হতো না ; সে জন্যও তাঁদেরকে কেবল ছাত্র নয় , অন্য শিক্ষকদনও বেশী সমীহ করে চলতেন । ফলে প্রয়োজন না পড়লে অধ্যক্ষের সাথে আমাদের / ছাত্রদের দেখা হতো না বললেই চলে , সেখানে শ্রদ্ধা সমীহ ও স্নেহের বিষয় ছিল সবার উপরে । বিশেষ প্রয়োজন না হলে তাঁরা যেমন আমাদের ডাকতেন না , আমাদেরও প্রয়োজন না হলে কেবল কোন পালা-পার্বন বা কোন অনুষ্ঠান ছাড়া তাঁদের সম্মুখে যাওয়া হতো না বললেই চলে ।
‘বাংলা’য় পড়ি বলে অনেকে আমাদের নিয়ে বাঁকা কথা বলতো । যেমন , মেধাবীরা বাংলা সাহিত্য পড়ে না বা এ বিষয়ে পড়ে কোন চাকরি পাওয়া যাবে না , এ বিষয়ে অনার্সের ডিগ্রী নিয়ে কি হবে ইত্যাদি । আমাদের স্যারদের কথা ছিল – অনার্স বা পাস কোর্স বা বিষয় যেটাই হোক , এটি ডিগ্রী পর্যায়ের তথা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়াশোনা , এ পর্যায়ে মনকে করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিশাল ও উদার , কারো কথায় মন খারাপ করা ঠিক না । তাঁরা আমাদের সাহস দিয়েছেন এই বলে যে , যে বিষয়েই পড়ি না কেন , সেই বিষয় যদি আত্মস্হ করা যায় , ফলাফল যদি ভাল করা যায় আর সমসাময়িক সময় , দেশ ও সমাজ সম্পর্কে সচেতন থাকা যায় ; তাহলে যে কোন প্রতিস্ঠানে বা যে কোন পর্যায়ের চাকরি পাওয়া কোন সমস্যা নয় । সরকারী কলেজের এই সব গুনী শিক্ষকদের সাহচর্য , স্নেহ , ভালবাসা এবং তাঁদের উদার অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকতার শিক্ষা সব সময় আমাদের পথ চলার পাথেয় হিসেবে কাজ করেছে । তাঁদের স্নেহ ধন্য এই কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পড়ালেখা করা ছাত্র সহ অন্য বিষয়ের অনেকেই কেবল সিভিল সার্ভিসেই চাকরি করছনে না , তাঁরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে বা ব্যবসা-বানিজ্য করে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন ।
অনার্স শেষে যখন মাস্টার্সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস শুরু করি , তখন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষকদের পড়ানোর মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখিনি ; বরং মনে হয়েছে আমাদের কলেজের শিক্ষকেরা ছিলেন অনেক বেশী আন্তরিক , মানবিক ও সংবেদনশীল । আমরা বিভিন্ন রেফারেন্স বই পড়ে যে কোন একটি বিষয়ের উপরে নোট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দেখাতাম ( এটিকে এখন মনে হয় এসাইনমেন্ট বলে ) , তাঁরা সেটি পড়ে পর্যালোচনা করে মার্কিং করে ভুল-ত্রুটি সংশোধন করে দিতেন । সব শিক্ষকই এ সব বিষয়ে খুবই আন্তরিক ছিলেন ; তবে আমি যখন তখন নোট নিয়ে হাজির হতাম বেশী কামরুল হুদা স্যারের কাছে । স্যারই আমাকে বলেছিলেন , আমি ধার করা কথা অর্থাৎ কোন রেফারেন্স বই থেকে হুবহু কিছু লিখি না ; ঐ সব বই থেকে সাহায়তা নিয়ে নিজের মত করে লিখি , তাই অন্যদের থেকে নম্বর একটু হলেও বেশী পাই । স্যারের এই স্বীকৃতিই আমাকে প্রতিটি বিষয় নিজের মত করে বুঝতে ও লিখতে বেশী উৎসাহ দিয়েছে । আর হয়তো এ জন্যই অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা গেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অন্তর্গত সকল কলেজের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে আমি উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেনীতে প্রথম স্হান পেয়েছি , কেউ প্রথম শ্রেনী কেউ পায়নি । বললে হয়তো আত্মপ্রচার করা হবে , তবুও না বলে পারছি না যে , বিভিন্ন রকম প্রতিকূলতা ও অসহযোগিতার পরেও মাস্টার্সে আমিই দ্বিতীয় শ্রেনীতে প্রথম হই , সে বারও কেউ প্রথম শ্রেনী পায়নি । আমি মনে-প্রানে বিশ্বাস করি – এই ফলাফল কেবল আমার মেধার জন্য হয়নি ; এর পেছনে আছে আমার কুস্টিয়া সরকারি কলেজের সে সময়ের ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ নামক বিষয়ের শিক্ষকদের আন্তরিক উৎসাহ অনুপ্রেরনা ও নিরন্তর দেয়া সাহস । প্রসংগত বলতে হয় – প্রথম হওয়ার কথা কখনোই ভাবিনি আমি ; তবে আমার পরীক্ষা অনুযায়ী যেমন ভেবেছিলাম ঠিক তেমন নম্বরই পেয়েছিলাম , কিন্তু এটাই যে সে সময়ের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সর্বোচ্চ নম্বর হবে তা মোটেও ভাবিনি ।
আমি আমার কৃতিত্ব জানানোর জন্য এটি লিখছি না । আমার কুস্টিয়া সরকারী কলেজের সে সময়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের অকৃত্রিম স্নেহ ভালবাসা ও অনুপ্রেরনা দেয়ার স্বীকৃতিটি জানানোর জন্যই বিষয়টি তুলে ধরেছি । কারন তাঁরাই আমাকে শিখিয়েছিলেন সাহিত্যকে কিভাবে মননে ধারন করতে হয় এবং তা মন থেকে ধারন অনুধাবন ও আত্নস্হ করতে পারলেই যে কোন প্রশ্নের উত্তরে সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রাথা সম্ভব । তাই কলেজে পড়ে কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার মধ্যে প্রথম হওয়ার সকল কৃতিত্ব আমি দিতে চাই আমার সে সময়ের কুস্টিয়া সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের । সব শিক্ষকই সব সময় আমাদের অনুপ্রেরনা দিলেও এক্ষেত্রে আমি একটু বেশী কৃতিত্ব দিতে চাই কামরুল হুদা স্যারকে । আমার মনে আছে এখনও যে , অনার্সের ফলাফল জানার পর ( কলেজ তখন বন্ধ থাকায় ) আমি কামরুল হুদা স্যারের বাসায় গিয়ে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছিলাম ; তিনি পরম স্নেহে আমার মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন , ‘ দেখো দেখো ও আমাদের মেয়ে খুব ভাল রেজাল্ট করেছে ‘ । তাঁদের মত শিক্ষকদের স্নেহ ও সাহচর্যের কারনে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়তে না পারার জন্য আমার মনে কোন কস্ট বা ক্ষোভ ছিল না , মনে হয় অন্যদের মনেও এ নিয়ে তেমন কস্ট ছিল না । স্যার আর একটি কথা বলেছিলেন , কর্মজীবনে যেন শিক্ষকতায় না এসে কোন অফিসিয়াল চাকরি করি । তবে স্যার নিরুৎসাহিত করলেও আমার ইচ্ছা তো শিক্ষকতাই ছিল । কিন্তু আমার বাবার স্বপ্ন ছিল ম্যাজিস্ট্রট হওয়া । একবার তাঁর পছন্দের বিষয় পড়িনি , তাই এবার তাঁকে কস্ট না দিয়ে তাঁর স্বপ্ন পূরনের জন্য ১৯৮৫ সালের বি সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহন করি ও উর্ত্তীণ হয়ে তাঁর কাঙ্খিত ‘ প্রশাসন ‘ ক্যাডারে যোগদান করে দেশপ্রেম হৃদয়ে ধারন করে সততা ও নিস্ঠার সাথে ত্রিশ বছর সরকারি দায়িত্ব পালন করার পর অবসরে যাই ।
কলেজের স্মৃতিচারন করতে গেলে সঙ্গত ভাবেই কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রসঙ্গ অবধারিত ভাবে এসে যাবেই । আমরা যারা জেলা বা মফস্বল কলেজে পড়ালেখা করেছি , অনেক দূর থেকে কখনো হেঁটে কখনো রিকশায় করে কলেজে যেতাম , আমাদের জীবনে তো তেমন কোন বৈচিত্র ছিল না বললেই চলে । সে জন্য কলেজ প্রাঙ্গন , শিক্ষক , সহপাঠী ও বন্ধুরাই ছিল সকলের কাছে বেশী আপন , বন্ধু সহপাঠীদের সাথে সময় কাটানোই ছিল আনন্দ । আমার লেখার মধ্যেও তাই এ বিষয়গুলিই বিশেষ ভাবে উঠে এসেছে । আমি গর্বিত যে , আমি এক সময় কুস্টিয়া সরকারী কলেজে পড়েছি ; মানবিক আদর্শ ও নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষকদের সাহচর্য পেয়েছি , হৃদয়বান অকৃত্রিম বন্ধু লাভ করেছি , এ কলেজ থেকেই অনার্সে ভাল ফলাফল করতে পেরেছি । অনেক কিছু যেমন মনে নেই , তেমনি অনেক কিছুই আবার মনেও আছে ; কিন্তু সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লিখতে গেলে তা অনেক বড় হয়ে যাবে ।
সরকারী চাকরিতে আমি এক সময়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কলেজ উইংএ উপ সচিবের দায়িত্ব পালনকালে দেশের সকল সরকারী কলেজের শিক্ষক পদায়নের নথি উপস্থাপনের সুযোগ পেয়েছি । আমাদের চেস্টা থাকতো একজন শিক্ষকের মেধার পাশাপাশি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংখা , কলেজের অবস্হান ও তাঁদের পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সমস্যা ইত্যাদি বিবেচনা করে পদায়নের প্রস্তাব করা । স্বাভাবিক ভাবেই , আমি সে সময়ে চেস্টা করতাম তুলনামূলক ভাল শিক্ষকগণ যাতে কুস্টিয়া সরকারী কলেজ ও কুস্টিয়া মহিলা কলেজে নিয়োগ বা পদায়ন পায় সেজন্য । মনে হতো – শুধু আমার এলাকার জন্য নয় , এ দু’টি কলেজ তো আমারই কলেজ , এ কলেজ দু’টির সাথে বিশেষ করে কুস্টিয়া সরকারী কলেজের সাথে তো আমার প্রানেরও সম্পর্ক , এখানকার সব কিছুর সাথেই আমার আত্মার সম্পর্ক । আমাদের সবার সেই প্রানের ঐতিহ্যমন্ডিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ কুস্টিয়া সরকারী কলেজ ‘ এর জন্ম বা প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তির শুভ মুহূর্তে আমার ঐকান্তিক চাওয়া – কুস্টিয়া সরকারী কলেজ যুগ ধরে তৈরী করে চলুক শুভ ও মানবিক বোধ সম্পন্ন মহান উদার ও নৈতিকতাসম্পন্ন বিশাল হৃদয়ের কল্যাণকামী মানুষ ; যে মানুষেরা যুগ যুগ ধরে জাতিকে আলোর পথ দেখাবে , দেশকে করবে গৌরব ও মহিমান্বিত ।
সৈয়দা আফরোজা বেগম
অতিরিক্ত সচিব ( অব: )
১৪ / ১০/ ২০২২